বাক্‌ ১৫২ ।। অনিকেশ দাশগুপ্ত


 মোহ রচনা

 

নিজেতে বুঁদ হয়ে আছেন সুধা

ভীরু আতরের কল্লোল-মোমে এই মুহূর্তের রাণি

মুগ্ধতার মেষ হেঁটে গেছে যে মনন-যুদ্ধে

বিদগ্ধ আঁচ স্বর্গের ভূমিকায় এসে দাঁড়ালে

সাধনালব্ধ পৃথিবীর মতো সাদা উন্নাসিক কুঠুরি

শব্দের মাঝে এক ফাঁক,তার জ্বলে ওঠা ধোঁয়াটে স্তন

সম্পর্কহীন গণিকা-আয়ু

সবুজের মাঝে বিস্মরণের গোল দিনপঞ্জি

আঁচল গুটিয়ে ম্লান নীলাঞ্জনে চেয়ে থাকে

অফিসপাড়ার অনন্ত ছাদে নিঝুম আত্মপ্রসাদে





পরিধি

 

মিথ্যে অপরাধবোধের মতো অম্লান এই ভেসে থাকা  

দুঃখের দাগ কেটে কেটে অনুশীলিত আলো এসে পড়ে

ছন্দপতন,হাঁফ ছেড়ে ওঠে জায়মান ঘাটের সিঁড়ি

অনাবিল মন্দিরবাজারের পিঠে রশ্মি গিলে খায়

বহতা কারখানার এই বাঁশি নিস্পন্দ জগতের কেউ নয়

কিছু ফেঁপে ওঠা নীলাভ শাড়ির পেট

কতকাল আগে প্রথম সকালের স্নেহভার আলগা হয়ে এলে

কোমল বক হাঁটুর ওপর তোলে ধোপদুরস্ত আয়না

ছিন্ন দলের মতো বাজেয়াপ্ত দিনে জলের এই পরিধি   

 

 

 



ছবি  সন্ধ্যা

 

সন্ধ্যার পিঠে হলুদ-বাটা আলোর পাঁচিল

ছবি তোলার সমৃদ্ধি ঘিরে তার মলিন বসন

 

কর্তৃত্বের সিংহভাগ রে রাখবার পড়ন্ত বেলা

ট্রেনের ভার দুলিয়ে যায় এতদূরের সাজগোজ

 

সকালের বাঁকা টিপ,অবিন্যস্ত সিঁথি

পায়ে গড়ানো নতুন আঁচ বুক অব্দি উঠে আসে

পিছনে তার ছায়ার দৌড় দরজা খুলে দেয়

 

 

 

 

 

 

পুতুল গানের আলো

 

ঝিলের ধারে এলিয়ে পড়ে সন্ধ্যা

ধানের শিষের ক্ষীর হারানো শিশুর মতো ডাকে

এক জীবনের স্বাতী

              গল্প-বলা তার ভরাট বুকের টান



একদিন খুব কৈশোরে মুঠো-মুঠো বালি

শামুকের খোলে ভরা আলো জ্বেলে

পিছু-পিছু হেঁটেছিল

             গাছের কোটরে 

                         নষ্ট পুতুলের গানে

 

 

 

 

 

 

ক্রীতদাস

 

সবার মতো আমিও এক ক্রীতদাস

আমি নিজেকে এতদিন সর্বজ্ঞ বলেই জেনে এসেছি

এবং দেখুন আমার দুহাতই তর্জনীবিহীন

আলো নিভে যাওয়ার পর ফিসফিস রে কথা বলা

এই বৃহৎ চতুর্ভুজগুলিই ক্রীড়ামোদী জনতার বড় প্রিয়



দেখুন একটু দূরের লালচে ইমারতেরা পুনরাবৃত্ত হচ্ছে

আমার মৃত্যুর প্রয়োজন নেই জেনেও

সন্তরা কিছু প্রতীক দেখে এই ত্রস্ত উড়ানের পূর্বাভাস

অনেকগুলি দলে ভাগ রে রেখেছিলেন

যুক্তিবাদের সেই তো শুরু



এবং প্রতিসমতার অকৃত্রিম আনন্দে

জুয়া অথবা ভাগ্যের সাধারণ তত্ত্ব দুরন্ত চাকার মতো

নিজেদের খুঁজে পেতে সাহায্য করলো

 

No comments:

Post a Comment