বাক্‌ ১৫২ ।। পলাশ মজুমদার


 

হে বৃক্ষনারী, আমায় হত্যা করো

 

 

ঘাস জন্মের কোঠরে নিলম্বন পিপাসা কুটির

টাপুর-টুপুর হত্যায় আনুষঙ্গিক ভিজে চুপ

ব্যাঙের ছাতার নীচে স্যাঁতস্যাঁতে ভ্রূণ,
মেঘডাকা বিকেল ধুয়ে যায়
                  চাক ভাঙে মধু।
পেলব ত্বকে
মস্তিষ্কের টবে
যোজন ক্রোশ ক্লান্তির ভীড়ে পাহারা খোঁজে যুদ্ধ
      রতি।
বীর্য, শৌর্য - সব হারামি,
                                  যুদ্ধাপরাধী !

ভূমি'র বুক চিরে সত্য
                              জবাবদাহ,
                                সুখ-ছাই।
ছায়া সরিয়ে নাও, জন্ম সরিয়ে নাও !
হে বৃক্ষনারী,
                   আমায় হত্যা করো !

 

 

ঐশ্বরিক

 

 

সাঁকোর উপর দিয়ে হেঁটে আসছেন ঈশ্বর ;

আমি দেখছি -

আরেকটু এগোলেই সাঁকোটিতে বড়সর ভাঙন!

 

আমি দেখছি, আমি জানি

তবু চেঁচিয়ে বলছি না,

আগাম সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছি না তাঁকে।

 

ঈশ্বর সর্বজ্ঞ। জ্যোতির্ময় পুরুষ।

এটুকু ভাঙন পেরিয়ে আসা তাঁর বাঁ হাতের খেল।

 

ভাবতে ভাবতে ঈশ্বর পড়ে গেলেন

ভাঙা সাঁকো থেকে সরাসরি খাদে।

আমি দেখতে পাচ্ছি, শুনতে পাচ্ছি

ঈশ্বরের আর্ত চিৎকার।

 

অতঃপর দুর্বল মন!

খাদের কিনারে হাত বাড়াতেই

ঈশ্বর উঠে এলেন আমার হাত ধরে।

 

কি আশ্চর্য ! ঈশ্বর আমাকে ঈশ্বর ভাবছেন!

আমি ভাবছি, 

এখানে কোনদিন কোনও খাদ ছিল না।

ভাঙন ছিল না। ঈশ্বর ছিলেন না।

 

 

এসো প্রেম, আমৃত্যু কোয়ারেন্টাইনে থাকি 

 

হৃদয়পুরে

 

জ্যোৎস্না পেতেছি,

দুঃখ বেড়ে দাও।

 

কষ্টের বাটিতে সাজিয়ে দাও

নিকষ আঁধার।

 

বিড়ম্বনার চৌকাঠে চৌকি বসাক

অশ্রুত সম্ভ্রম।

 

সুখ চুষে খাক

অসুখের বর্জ্য।

 

সেই ভালো!

 

এসো প্রেম, যুদ্ধের তরবারি নামিয়ে রাখি

অশ্রুর পায়ে।

 

এসো প্রেম, আমৃত্যু কোয়ারেন্টাইনে থাকি 

হৃদয়পুরে।

 

 


প্রেমিক

 

 

একাকিত্বের ক্লান্ত ছায়ায় উল্লাসে মাতে নির্জনতা,

বৈধব্যের রঙের মতো নির্লিপ্তি ছড়ায় ঘন সাদা ফ্যান।

বিষাদের গা বেয়ে টুপটুপ ঝরে শিশির কণা ,

জ্যোৎস্নার প্রলাপের মতো ভেঙে যায় শ্যাঁওলার ধ্যান।

 

বিষন্ন নিদাঘ রাতে জোনাকিরা শিখে নেয় বাতাসের শ্রম,

দুঃখের বুদবুদের মতো উড়ে যায় মিহিদানা সুখ।

কালাচের বিষে বিষে ঠোঁটে ধরা শ্বাপদের ভ্রম,

খেলি এসো - প্রগাঢ় লোমশ যেথা প্রেমিকের বুক।

 

 

 



যৌবন

 

 

পিপাসার গন্ধের মতো নির্ভার যৌবন। সুখের

চৌকাঠে আলপনা এঁকে রাখে শূন্যতাগুচ্ছ।

 

যৌনতার ক্ষুধার মতো স্বচ্ছ নদী। বিরহের

আগুনের ধুলোয় পুড়ে যায় শিৎকার স্বর।

 

জীর্ণতার দেয়ালের মতো শুদ্ধ আঁধার। প্রতারকের

উরুতে বসে জুয়া খেলে বিশ্বাসী বক।

 

রক্তের স্রোতের মতো শীতল বরফ। বিবেকের

আঙিনা দিয়ে হেঁটে যায় পরবাসী খুনী।

 

মৃত পোস্টকার্ডের মতো শান্ত হৃদয়। ঠিকানার

গর্ভে হারিয়ে যায় অসংখ্য ভ্রমহীন পিনকোড।

 

No comments:

Post a Comment