বাক্‌ ১৫২ ।। সূরজ দাশ


 

মহাশান্ত চরাচর, মা নিষাদ

 

 

টিউশন খেটে ঘরে ফেরা মাস্টারমশাইকে

আজ আর দেখি না কোথাও

 

ঠেক থেকে ঠেকে হা-হুল্লোড় উন্মাদনা

রাত্রি পতনের দিকে হাহা... হুহু... হুস... 

নিঃশব্দে উবে গেলো সব, আকাশের দিকে 

 

একটা শূন্য থেকে আর একটা শূন্য ধরবো বলে

সেই পুরাকাল থেকে বসে আছি

 

সারা বাড়ি হেঁটে বেড়ানো, কিছুই বলতে না পারা

পায়ের ছাপগুলো কেবলই সন্দেহ করে আমায়

 

কেবলই আমার অপারগতার দিকে তাকিয়ে থাকে

 

রাস্তার পর রাস্তা পেরিয়ে

গ্রাম থেকে শহর, গলিঘুঁজি থেকে রাজপথ 

হেঁটে হেঁটে হেঁটে চলে যায় এ জীবন, সুবর্ণরেখা তীরে

 

পৃথিবীর সমস্ত বিস্ময় খুঁটে খেতে চাওয়া বালক 

একদিন অপার বিস্ময়ে দেখে

চরাচরে কেবলই যাতনাময় হাহুতাশ 

 

আফ্রিকার, লাতিন আমেরিকার অসংখ্য নির্যাতিত

পশু মানুষের গোঙানি চিৎকার

 

গ্রামস্তর থেকে কল্লোলিনী মহানগর, আরব্য রজনী

উপনিষদ, সবই চাকা-চাকা, গোলবৃত্তিয় ধ্যামনা-তন্ত্র

 

কেবলই ধান্দাওয়ালা  ঠকবাজদের ভিড়ে 

দম-বন্ধ নাভিশ্বাস 

 

 

সূর্যাস্তের বিষন্ন হাসিটা আমার মায়ের

উঠোনে ছড়িয়ে থাকা ফুল ফুল রোদের টুকরোগুলো

আমার ফেলে আসা শৈশব

 

এইসব নিয়ে কথা হয়না আজকাল আর কারো সাথে

কেউ আর আসে না আমার বাগানে গাইতে গান

 

এইসব নিয়েই তবু সুপান্থ নদী পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি

যেন মহাকাল, যেন মহাশান্ত চরাচর, মা নিষাদ

ওঁ নমঃ, জবা কুসুম,  ওঁ নম শঙ্কাশন....

 

No comments:

Post a Comment