বাক্‌ ১৫২ ।। বিদিশা সরকার

 


কবিতার রাত ১ 

 

কন্ঠস্বর বদলে নিতে হয় 

কন্ঠস্বর প্রয়োজনে বদলে যায় 

আত্মস্তুতি যে একটা প্রয়োগ কৌশল 

বুঝতে বুঝতে মাঝরাত পর্যন্ত মেট্রো রেল

 

বিছানায় হিম পড়লে কোলবালিশ ফেটে তুলোর পাহাড় 

মুখ গুঁজে পড়ে থাকা রেবেকা পৌঁছতে পারে না

হারমোনিয়াম অব্দি 

তার আগেই গরম তরল স্বরবর্ণের পন্ঞ্চম অক্ষরে 

উৎকন্ঠা জুড়িয়ে গেলো কন্ঠস্বর বদলে যায় বৈকি 

 

 

 

 

কবিতার রাত ২ 

 

সেরামিক দেওয়ালে এসে থেমে গেল 

প্রভুত্ববিলাস 

সিঙ্গল্ বিছানা জুড়ে বিসুভিয়াসের লাভাজ্বর 

টিকোজিতে চাপা দেওয়া ফিল্টার কফির ক্রাইম সিরিজ 

ওসবেই দেখে নেওয়া কুত্তি বানিয়ে সারা ভাদ্রমাসে 

নরম পোশাকে নীল কতখানি লোহিতের 

শিবির বানায়  

এরপর ও বলেছিলে পরিব্রাজক হয়ে ইতিহাসে যারা 

হরপ্পা আদলে ছিল শিল্পকলা 

ফসিল উপমা 

 

 

 

 

পরিধি 

 

উপহারের ফুলগুলোতে কুন্ঠা,

আমার বিষয়েও ----- 

এই অন্যমানে যদিও সন্দেহপ্রবণ নয়

তবুও পূর্ণিমা বিষয়ে আর কথা,থাক 

আজ থাক বাক্ স্বাধীনতায় সংযম 

যা আমাদের বরাবরই ঠেলে দিয়েছে

এক একটি প্রকোষ্ঠে

আমরা চাষ আবাদের মধ্যে 

জলসেচের প্রয়োজনে নিযুক্ত করেছি শ্রমিক মৌমাছি

মধুঃক্ষরণের আ্যাপিয়ারি থেকে অন্নদাসকে বরখাস্ত করেছি 

আচরণের বর্ণবৈষম্যে 

অভিবাদনের পালক টুপি 

হারিয়ে ফেলেছি

অনুশোচনায়

হয়তো তুমিও জানো বিষাদের কারণে অবগুণ্ঠন

সমস্ত জিজ্ঞাসার উত্তর যেখানে সংরক্ষিত থাকে সন খ্রিস্টাব্দ সহ

 

 

 

দোলাচলে 

 

দুজনে জেগেছিলাম আলাদা আলাদা 

বিপদসীমার ওপর জলস্ফীতি 

ঘুম কেড়ে নিয়ে 

যে যার মতন ভিজে ভিজে 

সাঁকোর খবর নিয়ে 

ফিরেছি শ্মশান শূন্যতায় 

 

ব্যাধির জীবনে সম্পর্কসূত্রের ওই সাঁকোটকে 

স্বপ্নের ভিতরে 

ডুবে যেতে দেখে 

তোমাকেও ভেবেছি বুদবুদ 

 

তারপর অন্ধ দিন 

হাতড়ে হাতডে দরজা অব্দি 

অথচ খুলছি না 

 

 

 

অবশিষ্ট

 

রঙিন চশমা খুলে নিলে

যেটুকু রং থেকে যায়

সেটুকুই আমি 

 

সীমারেখা টেনে দিয়ে এমন নির্জনবাস 

বানপ্রস্থ থেকে দূরে 

পাপ পুণ্য মাধুকরী 

স্বপাকে আহার

 

সব কিছু তুমি চেয়েছিলে 

তাই

 

 

 

 

চুরুট

 

রক্তপাতজনিত কিছু ছায়ার মুখোমুখি আজ

হয়ত অসাড় ক্লান্ত পা

ভালবাসা ছিল না তো

হাভানা চুরুট আর ছেঁকা

 

তুষারপাতের পর পাতারাও নেই

শাখা প্রশাখায় কিছু শীতের কোলাজ

 

প্রাণ নেই সাড়া দিচ্ছে না 

 

 

 

 

গর্ভগৃহ 

 

জরাসন্ধ উরুসন্ধি স্বাধীনতা যদি 

শিকড় নিবিষ্ট কেন গহন গভীরে ? 

মিথোজীবি ইতিহাস বল্কলের গায়ে লেখা থাকে

জারোয়া পূজায় মগ্ন গর্ভগৃহ 

 

সিঁদুরে শনাক্ত হোক রজঃস্বলা মাস 

 

 

ডামি 

 

জেলখানা থেকে পাগলাগারদের 

দূরত্ব মাপছে ক্রীতদাস প্রথা

শিকল মজবুত হলে

আকাশ বিষয়ক কিছু তথ্য

চালান হয়ে যাবে রসায়ণাগারে 

 

বৈজ্ঞানিকের জীবনে আবিষ্কারকের ডামি বনাম শিকল 

 

 

 

 

ধাত্রী 

 

পূর্ণাঙ্গ শিশুর আসন্ন সময়ে

প্লাসেন্টার ক্রমবিবর্তন 

কন্যাভ্রুণ 

কোল পেতে রেখে

ধরিত্রী নিজেই ধাত্রী —-

 

পিতৃপরিচয়ের জন্য একজনও আসেনি।

 


No comments:

Post a Comment