বাক্‌ ১৫২ ।। নীলোৎপল গুপ্ত

 

স্বরগ্রাম--- কথা বলো

 

 

স্বরগ্রাম-লেখা পত্রাবলি ----বৃক্ষবল্কল

কথা বলো

ওই দূরে কুটিল তটিনী        সন্ধ্যা হল

ভ্রাম্যমাণ রাত্রি দেখো গ্রামদেশে ঈষৎ মন্থর এই ক্ষণে, এই স্থানু চিত্রসম্ভারে বিমুগ্ধ আমরা

হেঁটে যাচ্ছি বর্ণমালার দিকে।

 

সেই লিপি অন্ধকার জানে ? 

সারিবদ্ধ বৃক্ষকুল রাত্রির কিনারে বাঙ্ময়

তটিনীর রেখাটিও বিলুপ্ত হল চরাচরে

এ-চরম মুহূর্তঘিরে

বাতাস ও বল্কলে লেখা যত কূটাভাস ----

সঙ্গীতের বিবিধ হরফ --- স্বরগ্রাম

কথা বলো

 

আমরা বাক্যপ্রিয়, পথভ্রষ্ট ---

কিঞ্চিৎ সন্দেহ-আকুল

তথাপি মুগ্ধ হতে জানি।

 

 

 

 

অতল

 

 

জলশব্দে এসেছে মাছেরা

অবাক সে-গর্ভভরা জল

ডুব দিয়ে খুঁজছে ডুবুরি

কত রত্ন অতল অতল।

 

অতলের শেষে শিহরণ 

দন্ড গাঁথা অতলের বুকে

উছলে উঠছে জলধারা

জীবন্ত দন্ড-সম্মুখে।

 

জলের সে-চক্রব্যুহে এসে

মিশে যাচ্ছে অপূর্ব আগুন

উত্তাপের শীর্ষে জাগে প্রাণ

প্রাণ বুকে ছুটে যাচ্ছে ভ্রুণ।

 

ভ্রুণে ভ্রুণে ধাক্কা লাগে 

সংঘর্ষ ব্রহ্মাণ্ড অস্থির

সংঘাত ভূমি থেকে একা

জন্ম নিচ্ছে বিন্দু- শরীর।

 

এত খেলা এই ভাণ্ডে ওগো

এত ছোট্ট অনন্তের ঘর

চেয়ে দ্যাখো বিন্দু-জলে ভাসে

লক্ষ-কোটি বিন্দু-চরাচর।

 

 

 

 

কে তোমায় তর্জনী শেখালো 

 

 

নিঃশ্বাসপতন-লেখা বিচিত্র চিরকুট

কেন আজ বাতাসে রেখেছো ? 

কে তোমায় ইঙ্গিতে তর্জনী শেখালো ? 

আলোর বিপ্রতীপে কাঁপে জল, জলের গর্ভকেন্দ্রে

কে রাখে তরঙ্গের সুতো ! 

 

বৃক্ষের কাছে এসে ওষ্ঠ পেতে বারবার চেয়েছো চুম্বন

তুমি কে ? 

 

গ্রীষ্মছুটির দিন শেষ হয়ে এল

আবার অনন্ত ঘন্টা বাজছে ইস্কুলে

কে তুমি শিউলি আঁচলে বেঁধে

ঢুকে যাচ্ছো অঙ্কের ক্লাসে ? 

 

চেয়ে দ্যাখো আমরা এখনও

বসন্তের বাগানে বসে

পুড়ে যাচ্ছি কৃষ্ণচূড়ায়।

 


No comments:

Post a Comment