বাক্‌ ১৫২ ।। তমসা অরণ্য


 

আকাশবাণী কর্পোরেট কোম্পানি



প্রকৃতি সার্কাজম বোঝে না।

তার মেকানিজমে থাকে- ঢিলটি খাইলে

পাটকেলটি ছুঁড়িয়া দেওয়ার রেওয়াজ।

ভাঁজ করে যে সাইক্লোন চিঠি দিয়েছিল,

বাজ পড়ে পড়ে এসেছে যে সতর্কবাণী-

আকাশবাণী কর্পোরেট কোম্পানি তারে

বিরাট সম্ভাবনা করে ক্লায়েন্টের

পেছনে গুঁজিয়া দিলো।



সবচেয়ে বড়ো যে কর্তা, তারে কেউ দেখেইনি

কোনোদিন। নির্বিবাদে চালিয়েছেনও তিনি

অপারেশান ক্লিনহার্ট।

এএইভাবেই সমস্ত কেলোকর্তারেই লোকে

সেজদায়-প্রণামে গিলিয়া গেলো।



 

১১ নম্বর বিপদ সংকেত

 

 

হে বান্দাগণ,

যেইসব আলামত নিয়া তুমি চিক্কুর পাইরা

"কেয়ামত আইসা পড়লো, কেয়ামত কইলাম নিকটে"

বইলা অবিরত দিয়া যাও ফাল, সেই সব রেসও খতম।

মাতম যদি করতেই হয়, তবে একটা লইয়াই করো-

বুকের পশম ঝইরা ক্যানো

সেইখানে ঘৃণার রেশম হইতাছে চাষ।

ব্যাবাক আশ মিটাইতে গিয়া সর্বনাশ কিন্তু এম্নেই হয়।

 

হে আন্ধাগণ,

তুমি যেইসব আলামত গুইনা গুইনা

কেয়ামতের ক্যারক্যারাও, সেইসব দুইন্না ভর হইছে-হইয়া;

হওনের প্রায় সবটাই কিন্তু শেষ।

যেই আলামতরে গুনো নাই-

দেখবা, সেই 'বিশেষ' হইয়া তোমাগোরে খাওয়াবে বিষম!

যা আসিবার, আসিবেন ঠিক, কিন্তু

তোমার জানিবার মতো করে

আর বোধহয় নয়!

সর্বনাশ কইলাম বিনা নোটিশেই হয়।

আআর যিনি কাশিবার, তিনি কাশিবেন,

শিঙ্গার ফুঁকে ঠুকে দেবেন- কাষ্ঠহাতুড়ার

"আদালত আজ মুলতবি ঘোষণা করা হইলোর" বারি।

তোমাদের জারিজুরিও সেইখানেই শেষ।

 





গ্রাফিতি কিংবা এপিটাফ



আমাদের বিশেষ কোনো চেহারা নেই,

নেই বয়স। আমরা আদতে কলস। চিন্তাকলস!

জল আছে অথবা জল নেই।



খুব যত্ন করে কলমে গেঁথে তুলেছিলাম- কবিতা।

কতিপয় উৎসুক খুঁজতেই থাকলো- আমার মুখ!

সুলুক সন্ধান কে কে করেছিল, আমার বিশেষ

জানা নাই।

কেউ কেউ হয়তো চোখ বুজে ভাবতে চেষ্টা করে-

বুক আছে? নাকি নেই?

এদের পর্বত আরোহণে দু গ্লাস রূহ আফজা না ঢেলে

আমি নিরাশা শরবত ঢেলে দেই।



আমাদের বিশেষ কোনো পরিচিতি নেই,

নেই কাস্ট কিংবা রিলেজিনভেদ। আমাদের বেদ-

নির্মেদ সাম্যবাদিতা অথবা মানবতাবাদ!

তল আছে অথবা তল নেই।

তলের কতল হচ্ছে এইখানে অহর্নিশ, বড়জোর তুমি

অতলতায় ডুবতে পারো নির্বিষ কিছু না কিছুর মতন।



অনেকেই সালামে আমাকে খোঁজে, অনেকে খোঁজে

আদাবে-নমস্কারে। আমি সমস্ত শুভেচ্ছার ঘাড়ে

"দোস্ত, চল চা খেয়ে আসি" রূপ

ঝুপসিনান দিয়ে উঠি।

কিন্তু আমাকে চুলের মুঠি ধরে জানতেই যেন চাওয়া হয়-

দোয়া শিখছো গোটা ছয়? অথবা মন্তর?



আমাদের বিশেষ কোনো বেয়ারা স্বভাব নেই,

নেই স্বভাবদোষ। আমরা আদতে যা তাহাই। হয়তো অলস!

বল আছে অথবা বল নাই।



আমরা তাহলে কী? আদতে কী চাই?

আমরা কভি কবি, কভি কেউরে ভী মানে না অমন কবিতাই!

আমাদের প্রকাশ্য এজেন্ডা একটাই-

মানুষ অভেদ;

তারে নারীতে-পুরুষে,

ইসলামে-বাইবেলে-কাশীতে

নাই খুঁজিতে নাই!



 

 

বই হোক মেশিনগান

 

 

কেউ চেয়েছিল গুলি ফুল হয়ে ফুটুক।

কিন্তু ব্যাবাক ফুল ঝুল বারান্দায় রোদেল দোল খেতে খেতে

আয়েশি জীবন মাঙে।

অতএব লোকেরা বুঝে নিলো-

অভেদের কপাল তাক কইরা ফুটবে তো গুলিই উঠুক।

 

কেউ চেয়েছিল গুলি ফুল হয়ে ফুটুক।

কেউ কেউ চেয়েছিল ফুলই বর্ষিত হোক বন্দুকের

নল থেকে।

 

আপনি জল থেকে সর্বোচ্চ কী আশা করেন? জীবন?

আর্সেনিক উপস্থিতি ভুলে গেলেন? জলও কিন্তু মরণ!

 

স্বপ্নময় মুলতানি মাখন বাদ দিয়া

আমি চাইতাছি অন্যরকম কিছু।

কাস্ততে শান দিয়াও, কল্লা ফেলায়া দেওনডা

আজ এক্কেরে ভুইল্লা যাইতে কইতাছি না। তবে চাইতেছি-

মেশিনগান পান চিবুতে চিবুতে

ঠোঁট করুক সর্বতো প্রেমময় লাল,

কামান দাগবার সঙ্গে সঙ্গে যত্রতত্র গিয়া পড়বে

অমূল্য কিংবা বিনামূল্যের সব বই।

 

আর বলতাছি যদি কিছু হইবারই হয়-

বই হোক মেশিনগান!

মাথার ভেতরে পট্টাসপট ফুটবো,

মতান্তরের রোল উঠবো,

ঝাঁকবো, ঝুঁকবো, ঝাঁকাইবো, ঝুঁকাইবোওওঅঅঅঅ...

শেষমেষ হিংসাবোধ মইরা

ফুটবো সর্ব মত সওনের আতরীয় ঘ্রাণ।



কি আপনে রেডি তো?

 

No comments:

Post a Comment